ই-কমার্স কি? ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও এখন আধুনিকতার ছোঁয়া বইছে। এখন প্রতিটি ক্ষেত্রে ই-কমার্স আমাদের সাথে জড়িত রয়েছে। আজকের আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারবেন ই-কমার্স কি, ই-কমার্সের সুবিধা ও অসুবিধা।
আপনি যদি ই-কমার্স ব্যবসায় করতে চান। তাহলে গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস এবং বাংলাদেশের জনপ্রিয় ই কমার্স সাইট থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয় বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
পেজ সূচিপত্রঃ ই-কমার্স কি? ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
- ই-কমার্স কি
- ই-কমার্সের সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ
- ই-কমার্স এর সুবিধা
- ই-কমার্স এর অসুবিধা
- ই-কমার্স বিজনেস মডেল কি
- শেষ কথা
ই-কমার্স কি?
ই-কমার্সের সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ?
আপনি যদি ভবিষ্যতে কোন ই-কমার্স প্রতিষ্টান গড়ে তুলোর চিন্তা ভাবনা করে থাকেন। তাহলে আপনাকে আগে ই-কমার্সের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে। আর তাই এখন আমি আপনাকে বিস্তারিত ভাবে জানিয়ে দিবো।ই-কমার্স এর সুবিধা
দিন যত যাচ্ছে ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে ই-কমার্সের ব্যবহার। ই-কমার্স ব্যবহারে রয়েছে অনেক সুবিধা যেমনঃ
১.নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা
ই-কমার্স ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কারণে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে কর্মসংস্থানে যে সকল মানুষ কাজ করে। তারা তাদের কাজের মাধ্যমে বেতন পেয়ে থাকে।
২.খরচ হ্রাস
অন্যান্য আট- দশটা ব্যবসায় থেকে ই-কমার্স ব্যবসায় করার খরচ তুলনামূলক কম। আপনি যদি ই-কমার্স ব্যবসায় করতে চান। তাহলে প্রথমেই আপনার সুন্দর একটি ওয়েবসাইট থাকতে হবে। এছাড়াও আপনার ফেসবুক পেজ এবং ইমেইল ইত্যাদি থাকতে হবে। ই-কমার্স এর মাধ্যমে বিশ্বের যেকোন প্রান্তেই আপনি পণ্য বা সেবা দিতে পারবেন।
৩.কর্ম সময় কম
ই-কমার্স ব্যবসায়ে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করার জন্য কোন রকম নিদিষ্ট সময় বেধে দেওয়া থাকে না। ক্রেতা তার ইচ্ছা মতো যেকোন সময় পণ্য ক্রয় করতে পারেন। এখানে সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনাকে পণ্য বিক্রির জন্য কাস্টমারের সামনে উপস্থিত হতে হবে না। বরং আপনি সরাসরি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসে থেকে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে করতে পারবেন।
৪.গতিশীলতা
ই-কমার্সে খুব অল্প সময়ের ভেতরে আর্থিক লেনদেন করা সম্ভব। যে কারণে এই পদ্ধতিতে একজন কাস্টমার বা ভোক্তা চাইলে পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে শুধু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তাদের যেকোন লেনদেন সম্পূর্ণ করতে পারেন। আর এ কারণে এটি ব্যবসায়ের জন্য একটু গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
৫.কাস্টমার সার্ভিস
ই-কমার্স এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাস্টমারদের বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে থাকে। যে কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো খুব অল্প সময়ের মধ্যে উন্নতি লাভ করতে পারে। এতে প্রতিষ্ঠানের ক্রয়-বিক্রয় বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
৬.বিপণন সুবিধা
আপনি যখন ই-কমার্স এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটে প্রোডাক্ট দিয়ে পোস্ট করবেন। তখন খুব সহজে দেশ ও দেশের বাহিরের মানুষ আপনার প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানবে এবং ক্রয় করবে। এভাবে আপনি ই-কমাস সাইটের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে নিজের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পরিধি বৃদ্ধি করাতে পারবেন।
৭.লেনদেন ব্যয় সংকোচ
আপনি যদি ই-কমার্স ব্যবসায় শুরু করেন। তাহলে এতে আপনার লেনদেন বাই কম হবে। কারণ ই-কমার্স ব্যবসায় পরিচালন করার জন্য খুব একটা বেশি কর্মচারী প্রয়োজন হয় না। কারণ ই-কমার্সের লেনদেনসমূহ খাতায় লেখার প্রয়োজন পড়ে না। ডকুমেন্ট হিসেবে তৈরি করা হয়। এতে কর্মচারীর প্রয়োজন খুবই কম হয়।
ই-কমার্স এর অসুবিধা
এতক্ষণে আপনারা ই-কমার্স এর সুবিধা সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। আসলে এটা সত্যি যে, প্রত্যেকটি বিষয়েরই যেমন সুবিধা থাকে তেমনি সেটির অসুবিধাও থাকে। এবার আমরা ই-কমার্স ব্যবসায়ের কিছু অসুবিধা সম্পর্কে জানব। যেমনঃ
১.প্রতিযোগিতা বেশি
সাধারণত ফিজিক্যাল দোকানের চেয়ে অনলাইনে প্রতিযোগিতা বেশি হয়ে থাকে। কারণ ই-কমার্স ব্যবসায় খুব সহজে শুরু করা যায়। এবং যে কেউ তার দক্ষতা অনুযায়ী কাস্টমার আনতে পারে। তাই আপনাকে ব্যবসায় করতে হলে এখানে পরিশ্রম করতে হবে।
২.টেকনোলজির উপর নির্ভরশীল
ই-কমার্স ব্যবসায় মূলত টেকনোলজির উপর নির্ভরশীল। যেমনঃ একটি ই-কমার্স সাইট তৈরি, হোস্টিং সার্ভিস, এটির মেইনটেন্যান্স এবং অনলাইন পেমেন্ট ইত্যাদি টেকনোলজির উপর নির্ভর করে। কেউ যদি টেকনোলজি সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞানও অর্জন না করে তাহলে তার পক্ষে এই ব্যবসায়ী করা সম্ভব।
৩.টেকনিক্যালি সমস্যা
সাধারণত একজন কাস্টমার নিকটস্থ দোকানে কোন কিছু ক্রয় করে নির্বিঘ্নে বাসায় আসতে পারে। কিন্তু ই-কমার্স সেক্টরে কেনাকাটা করা একটু আলাদা। এখানে পণ্যের অর্ডার ঠিকমতো হওয়া কুরিয়ারের মাধ্যমে বাসায় পৌঁছানো অনেক কিছু নির্ভর করে টেকনোলজির উপর। আর তাই কাস্টমার বা প্রতিষ্ঠানের কোন একজনের টেকনিক্যাল সমস্যা হলে বিক্রয় করা সম্ভব হয়ে পরে।
৪.বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব
আমাদের দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে পরিগণিত হলেও ই-কমার্স ব্যবসায়ের জন্য এখনও সম্পূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। অনেক অসৎ ই-কমার্স ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অধিক মুনাফা লাভের আশায় কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য দেয় না। এতে কাস্টমারা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে। এবং গ্রাহক তখন অজানা ব্র্যান্ড বা ওয়েবসাইট থেকে পণ্য ক্রয় করতে উদ্যোগ থাকে।
৫.ডেলিভারি চার্জ
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য কেনাকাটার সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ডেলিভারি চার্জ। কেননা পণ্যের মূল্যের সাথে সাথে ডেলিভারি চার্জ ও কাস্টমার কে বহন করতে হয়। এতে অনেক সময় দেখা যায়, ডেলিভারি চার্জ বেশি হলে কাস্টমার অর্ডার ক্যানসেল করে দেয়।
৬.সিকিউরিটি ইস্যু
অনলাইনে কেনাকাটার মধ্যে সবচেয়ে বড় একটি অসুবিধা হলো এর সিকিউরিটি ইস্যু। অনেক সময় সাইবার অপারিধারা বিভিন্ন উপায়ে কাস্টমারের তথ্য অ্যাক্সেস করে থাকে। যা পরবর্তীতে ব্যবসায়ের হুমকি হতে পারে।
ই-কমার্স বিজনেস মডেল কি
ই-কমার্স বিজনেস মডেল হচ্ছে কিভাবে একটা সুন্দর ফার্ম বা সংগঠন তৈরি করবে, কিভাবে প্রতিষ্ঠানের পণ্যগুলো সরবরাহ করবে এবং একটা ভ্যালু আয়ত্ত করবে। অর্থাৎ সার্বিক পরিস্থিতি সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা করাই বিজনেস মডেল।
আরও সহজ ভাষায় বলতে গেলে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের জন্য গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে যে মডেল তৈরি করা হবে। তাকে ই-কমার্স বিজনেস মডেল বলে।
শেষ কথা
ই-কমার্স এর মাধ্যমে আমরা উপকৃত হলেও এর কিছু ক্ষতি কর দিক রয়েছে। তবে এটি সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে। ই-কমার্স ব্যবসায় করে লাভবান হওয়া সম্ভব। আজকের এই আর্টিকেলটি পরে আপনারা বুঝতে পারছেন। ই-কমার্স কি? এবং ই-কমার্স এর সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ।
আপনি যদি কোন ই-কমার্স ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়তে চান। তাহলে আপনাকে আগে ই-কমার্স সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তো আর্টিকেলটি পড়ে যদি কোথাও বুঝতে সমস্যা হয়। কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। আজকের মতো আমরা এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আগামী দিনে এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল নিয়ে আবারও হাজির হব ইনশাআল্লাহ।
হেল্থ কেয়ারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url