নিম পাতার ব্যবহার - নিম পাতার ক্ষতিকর দিক

যদি আমাদের মুখে একটা ব্রন বের হয় তাহলে আমরা সেটা নিয়ে অনেক, দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। কিন্তু আমরা অনেকে জানিনা যে আমাদের আশেপাশে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যেগুলা মাধ্যমে আমরা এই ধরনের সমস্যা দূর করতে পারি। ত্বকের সমস্যা এর পাশাপাশি শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার জন্য নিমপাতার গুরুত্ব রয়েছে অপরিসীম।
নিম পাতার ব্যবহার এ আমাদের ছোটখাটো সমস্যা দূর করে থাকে। এটা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। আমি আজকে এই পোস্টে জানাবো নিম পাতার ব্যবহার করে আমাদের শরীরের কোন কোন সমস্যা গুলো দূর করতে পা। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক নিম পাতার ব্যবহার।

পেজ সূচিপতাগেঃ নিম পাতার ব্যবহার - নিম পাতার ক্ষতিকর দিক

নিম পাতার ব্যবহার 

নিম পাতার ব্যবহার কিভাবে করব ? সেইসব সম্পর্কে আলোচনা করব এই পোস্টে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক সঠিকভাবে নিম পাতার ব্যবহার। প্রাচীন কাল থেকে মানুষ নিমপাতা বিভিন্ন ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে আসতেছে। প্রাচীনকালে মানুষজন নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে ভালো জানেন। এখন যদি একটু অসুখ হয় তাহলে সবাই ডাক্তারের কাছে চলে যায় এবং বিভিন্ন ধরনের ওষুধ নেই। 

আদিমকালে মানুষ বিভিন্ন অসুখ এর ওষুধ হিসেবে নিম পাতা ব্যবহার করতেন। নিম পাতার ব্যাবহার প্রচুর উপকারিতা রয়েছে। নিম পাতা আমাদের ত্বক, মুখ সহ বিভিন্ন ধরনের অসুখ এর জন্য ব্যবহার করে থাকি। বিশেষ করে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নিম পাতার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। নিম পাতা রস নিয়মিত খেলে আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসে। 

যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের নিম পাতার রস নিয়মিত খাওয়া উচিত। নিম পাতার রস খেলে  রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। যদি অতিরিক্ত মাত্রায় জ্বর হয় তাহলে নিম পাতার রস জর ভালো করার জন্য খুব ভালো কাজ করে। আবার নিমপাতা মশা তাড়ানো কাজে ব্যবহার করা হয়। এটা অনেকে জানে না যে নিমপাতা দিয়ে মশা তাড়ানো যাই। 

নিমপাতা ঘরে রাখলে ঘরে পোকামাকড়, মশা এগুলো ঘরে থাকে না। বিশেষ করে নিম পাতা আমাদের চুলের জলে খুবই উপকারী যাদের অতিরিক্ত চুল পড়া রয়েছে তারা নিম পাতা ব্যবহার করে চুল পড়া কমাতে পারে। নিম পাতা চুলে দিলে মাথা ঠান্ডা থাকে। নিমপাতা আমাদের ত্বকে উজ্জ্বলতার বৃদ্ধি করে এবং ত্বকে ব্রণ দূর করে। 

নিম পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে ঘরের মধ্যে ছিটিয়ে রাখলে ঘরের মধ্যে কোন পোকামাকড় প্রবেশ করে না। এবং যদি ঘরে পোকামাকড় থাকে তাহলে সেটি চলে যায়।

নিম পাতার ক্ষতিকারক দিক


নিম পাতার ক্ষতিকারক দিক গুলো সম্পর্কে জানবো। আমরা জানি যে নিম পাতা আমাদের শরীরের জন খুবই উপকারী। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার বা অনিয়মিত ব্যবহার এর ফলে নিম পাতার ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। অতিরিক্ত ব্যবহার ও ভুল উপায়ে ব্যবহার করলে আমাদের পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণের নিম পাতার রস সেবন করলে আমাদের পেটে ব্যথা হতে পারে। 

পেট ব্যথা এর সাথে ডায়রিয়া, বদহজম এ ধরনের সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। আবার নিম পাতার রস আমাদের শরীরের রক্ত চাপ কমে দেয়। তাই যাদের স্বাভাবিক এর চেয়ে কম রক্তচাপ রয়েছে তাদের জন্য নিম পাতার রস খাওয়াটা অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। আবার নিম পাতার রস আমরা অনেকেই খেতে পারি না এক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকের বমি বমি ভাব হয় আবার অনেকের বমি হয়। 

নিম পাতার রস গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই গর্ভবতী মহিলাদের নিম পাতার রস না খাওয়াটাই উচিত। গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভে ধারণ করা শিশুর জন্য এটি ক্ষতিকারক হতে পারে। যাদের এলার্জি রয়েছে তাদের দেখা যায় নিম পাতা ত্বকে লাগালে এলার্জি শুরু হয় এবং ত্বকের চুলকানি হয়। 

নিম পাতার রস শিশুদের খাওয়ানো উচিত না কেননা অতিরিক্ত সেবন করা পড়লে এটি শিশুদের সমস্যা দেখা দিতে পারে। শিশুদের ঘুমের সমস্যা করতে পারে, এবং পেট খারাপ এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে শিশুদের জন্য নিম পাতার রস খাওয়া উচিত না। আমরা আগে জেনে এসেছি যে নিম পাতার রস শরীরের বিভিন্ন অসুখ এর জন্য উপকারী তবে এটি অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করা ঠিক না।

অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করলে আরো বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই নিয়ম মেনে পরিমান মত সেবন করা উচিত। যদি আপনার মনে হয় যে আমার নিম পাতার রস বেশি খাওয়া পড়েছে যার কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে আপনাকে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। 

চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার

চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানব। নিমপাতা আমাদের চুলের জন্য খুবই উপকারী এটি আমাদের চুলের খুশকি দূর করে এবং চুলে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। যাদের চুলে অতিরিক্ত পরিমাণে খুশকি হয় চুল অনেক পড়ে যায় তারা নিম পাতা ব্যবহার করে এই সমস্যা থেকে উদ্ধার করতে পারবেন। চুল আমাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। 

যার কারণে আমাদের চুলের যত্ন নেওয়া উচিত। আমাদের মাথায় কোন ব্যাকটেরিয়া থাকলে নিমপাতা ব্যবহার করলে সেগুলো ভালো হয়ে যায়। চুল পড়া দূর করে এবং তার সাথে চুলের গোড়া মজবুত করে। অনেকেরই দেখা যায় অল্প বয়সে চুল পড়ে যায় এবং চুল ভেঙে যায় তাদের এই সমস্যার দূর করার জন্য নিম পাতার ব্যবহার করা উচিত। 

এটি চুলের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং চুল চরমলে গড়ে তোলে। নিমপাতা কিভাবে চুলে ব্যবহার করতে হয় সেটা সম্পর্কে জানব। এক লিটার পানিতে পরিষ্কার কিছু নিমপাতা নেই। নিয়ে সেটিকে একটি পাত্রে রেখে কিছুক্ষণ ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভালো হবে ফুটিয়ে নেই। ফুটিয়ে নেওয়ার পর সেটিকে ঠান্ডা হওয়ার জন্য কিছুক্ষণ রাখতে হবে। 

ঠান্ডা হয়ে গেলে নিম পাতা সব পানিটি একটি পরিষ্কার ছাকনি দিয়ে ভালোভাবে ছেকেনি ঝিকে নেওয়ার পর যে পানি টি পাওয়া যাবে সেটি চুলে ব্যবহার করতে হবে। প্রথমে ভালো করে চুলে শ্যাম্পু করে নেই। শ্যাম্পু করে নেওয়ার পর চুল ভালোভাবে ধরে নিয়ে যে পানিটি আমরা নিম পাতা থেকে বের করেছিলাম সেটি দিয়ে মাথা আরেকবার ভালোভাবে ধুয়ে নি এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে দেখা যাবে। 

আমাদের চুল আগে থেকে অনেক মজবুত হয়েছে এবং চুলের খুশকি দূর হয়ে যাবে। এটার পাশাপাশি আমরা আরেকভাবে চুলের যত্নে নিম পাতা ব্যবহার করতে পারি প্রথমত কিছু পরিমাণের নিমপাতা নিই। তারপর সেটি ভালোভাবে ভালো পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিই। পরিষ্কার করার নিমপাতা গুলো ভালোভাবে পেস্ট করে নিতে হবে। 

পেস্ট করে নেওয়ার পর সেটি আমাদের পুরো মাথা ভালো ভাবে লাগিয়ে দিতে হবে। লাগিয়ে দেওয়ার পর 30 থেকে 40 মিনিট পর ভালোভাবে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধরে নিতে হবে। তাহলে দেখতে পাবেন আমাদের চুল আগে থেকে অনেকটা উজ্জ্বলতা হবে এবং চুল পড়া দূর হবে।

আমাদের যাদের চুল পড়ে যেয়ে চুল পাতলা হয়ে গেছে তাদের জন্য একটি ভালো উপায় হল নিম পাতার সাথে নারিকেল তেল ব্যবহার করে চুল আরও বৃদ্ধি করানো যায়। তো এটি কিভাবে করব সম্পূর্ণ জানব এখন। এটি করার জন্য আমাদের নিম পাতা শুকিয়ে নিয়ে ভালোভাবে গুড়ো করে নিতে হবে। বুড়ো করা নিমপাতা নারিকেল তেলের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।

নিমপাতা মিশ্রিত তেল মাথায় ভালো ভাবে লাগিয়ে দিতে হবে। মাথায় লাগিয়ে দুই থেকে তিন ঘন্টার রেখে দিতে হবে দুই থেকে তিন ঘন্টা রেখে দিলে তারপর এটিকে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে তাহলে দেখতে পাবে না আমাদের চুল অনেকটা ঘন হয়ে গেছে।

নিমপাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়


নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় রয়েছে অনেক এর মধ্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপায় হল: আমরা সকলে জানি নিম পাতা আমাদের ত্বকের যেন খুবই উপকারী। এটি আমাদের ত্বকের ময়লা লাগানোরমাটি দূর করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য আমরা নিম পাতার সাথে মধু ব্যবহার করতে পারি। 

এর জন্য আমাদের কিছু নিমপাতা সংগ্রহ করতে হবে। নিম পাতাগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে সেটি গরম পানিতে কিছুক্ষণ ফুটাতে হবে । ফুটানো হলে গরম পানি থেকে নিম পাতা গুলো থেকে তুলে নিতে হবে।এবং সেটিকে ভালোভাবে পেস্ট করে নিতে হবে। পেস্ট করে নেওয়ার পর সেগুলো এক চামচ মধুর সাথে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। 

মিশিয়ে নিয়ে সেটি আমাদের ত্বকে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে। তারপর সেটিকে ভালো পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। তাহলে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। নিম পাতার সাথে হলুদের মিশ্রণ বানিয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর উপায়। প্রথমত আমাদের কিছু নিম পাতা নিয়ে সেটিকে ভালোভাবে পেস্ট করে নিতে হবে। 

এবং অপর পাশে কিছু পরিমাণ হলুদ নিয়ে সেটিকেও ভালোভাবে পেস্ট করে নিতে হবে। এবার দুটোকে একসাথে মিশিয়ে আমাদের ফেসে লাগিয়ে দিতে হবে। লাগানোর ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর সেটিকে ভালো হতে হবে। এটা আমাদের ত্বকের ময়লা মাটি দূর করবে এবং ত্বকে থাকা ব্রণ ব্রন ও দূর করবে।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার অনেক কিছু অজানা তথ্য জানতে পেরেছেন। নিম পাতার ব্যবহার করে আমরা যেসব কাজগুলো করতে পারি সেগুলো আমার এই পোস্টটি পড়ে আশা করি আপনি বুঝে গেছেন এতক্ষণে। এখন আপনারও যদি এরকম কোন সমস্যায় পড়েন তাহলে আপনি খুব সহজেই নিম পাতা ব্যবহার করে আপনাদের সমস্যাটা দূর করতে পারবেন।

আমার এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এবং পোস্টে যদি কোন কোথাও কিছু বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে কমেন্ট বক্সে বলে দেবেন। আর না হলে আমার যোগাযোগ পেজে আমার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

হেল্থ কেয়ারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url