খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা
আদিম কাল থেকে শরীরে যত্নে ব্যবহার হয়ে আসতেছে তুলছি। বাড়ি উঠানে গজানো এই
তুলসী গাছের ডাল পাতা সবই আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। সর্দি ,কাশি,
পেটের সমস্যা, সহ বিভিন্ন অসুখ থেকে প্রতিরোধ করে এই তুলসী। তুলসির পাতা
আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়।
এই তুলসী পাতা আমাদের হজম প্রক্রিয়া, ব্রেন, লিভার, কিডনি এগুলোর ওপর
প্রভাব বিস্তার করে। আমাদের যদি কোন অসুখ হয় তাহলে আমরা সাধারণত কোন ডাক্তারের
কাছে যায়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা আমাদের প্রকৃতির মাঝে অনেক ওষুধি
উপাদান রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করলে ওষুধের থেকে ভালো কাজ করে থাকে।
পেজ সূচিপত্র :খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা
তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে এই পোস্টে-আমরা
সকলে জানি তুলসী একটি ঔষধি গাছ। এই গাছের পাতা, ডাল থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ গাছেরই প্রয়োজন রয়েছে। আমরা অনেকে জানি না যে, তুলসির পাতা জ্বর, সর্দি সহ ব্রেন ,লিভার ,কিডনি
এগুলা ভালো রাখতে সাহায্য করে।
তুলসী পাতার উপকারিতা: তুলসী পাতার উপকারিতা গুলো হলো:
1.তুলসী পাতা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এবং এটি আমাদের শরীরের ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস থেকে সুরক্ষা রাখতে সহায়তা
করে।
তুলসী পাতার অপকারিতা: ইতিমধ্যে আমরা তুলসী পাতার অনেক উপকার
দেখে ফেলেছি। তবে অতিরিক্ত এবং অনিয়মিত এই তুলসী পাতা ব্যবহারের ফলে কিছু
অপকারিতা দিক রয়েছে সেগুলো হলো:
1, তুলসী পাতা আমাদের শরীরের রক্ত পাতলা করতে সাহায্য করে। তবে যারা শরীরের রক্ত
পাতলা করা ওষুধ সেবন করে থাকেন তাদের জন্য তুলসী পাতা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
2, গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে তুলসী পাতা সেবন করা উচিত না। একজন গর্ভবতী নারীর
ক্ষেত্রে তুলসী পাতা ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
3, তুলসী পাতা অনিয়মিত অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে পেটের সমস্যা হতে পারে।
4, তুলসী পাতা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী আবার কারো কারো ক্ষেত্রে
তুলসী পাতা ত্বকের ব্যবহারের এলার্জি প্রবাহ করতে পারে।
তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে কি হয়
তুলছে পাতা চিবিয়ে খেলে কি হয়? তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে শরীরের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
তুলসী পাতা আমাদের দাঁতের জন্য খুবই উপকারী এটা আমাদের দাঁত, মাড়ি বিভিন্ন
সমস্যা সমাধান করে। আবার এই তুলসী পাতা আমাদের মুখের দুর্গন্ধ থাকলে সেটি দূর করতে সাহায্য
করে। আমাদের যাদের সর্দি কাশি হয় তাদের তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে খুব দ্রুত ভালো
হয়ে যায়।
আমরা এখনো অনেকেই জানিনা কে তুলসী পাতা আমাদের শরীরে কত উপকার আসতে পারে। ছোট বাচ্চাদের জ্বর সর্দি হলে তুলসী পাতা খাওয়ালে সেটি ওষুধের থেকে ভালো
কাজ করে। তুলসী পাতা শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
তবে অতিরিক্ত পরিমাণে তুলসী পাতা চিবালে তুলসী পাতাতে থাকা কিছু প্রকৃতির
যৌগ দাঁতের এনামেল নষ্ট করতে পারে। অনেকের মধ্যে এই তুলসী পাতা পানির সাথে গ্রহণ করা ভালো। সরাসরি গাছ থেকে তুলে চিবানো উচিত না।
তুলসী পাতার রস খাওয়ার নিয়ম
তুলসী পাতা রস খাওয়ার নিয়ম গুলো জানবো আমরা-আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে
তুলসী পাতা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সাথে বিভিন্ন
রোগ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। নিচে আমরা তুলসী পাতার রস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানব:
প্রথমে আমাদের ১৫ থেকে ২০ টি তুলসীপাতা সংগ্রহ করতে হবে। সেটি থেকে ভালোভাবে
রস বের করে নিতে হবে। যদি ভালোভাবে রস বের না হয় তাহলে প্রয়োজনে কিছু পানি
ব্যবহার করে পাতলা রস তৈরি করতে হবে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক থেকে দুই চামচ
রস খেলে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
দুই তিন চামচ তুলসী পাতার রসের সাথে এক চামচ মধু এবং সাথে একটু আদার
রস মিশিয়ে সেটিকে ভালোভাবে মিশ্রণ করে খেলে জ্বর ঠান্ডা কাশি
থাকলে খুব ভালো হয়ে যাবে। তুলসী পাতার রস হজমের জন্য খুবই ভালো কাজ করে।
দুই তিন চামচ তুলসী পাতার রস এর সাথে এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে রেগুলার সেবন করলে
দেখতে পাবেন আপনার হজম শক্তিটা ভালো আছে।
তবে অতিরিক্ত পরিমাণে পান করা ঠিক না এটা থেকে এড়িয়ে থাকতে হবে। নিয়মিত তুলসী
পাতার রস সেবন করলে অবশ্য আমাদের শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা থেকে সমাধান করতে পারব।
দীর্ঘমেয়াদী কোন অসুখ থাকলে সেটি ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক
আমরা সকলে জানি তুলসী পাতা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী এবং
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তবে যদি অতিরিক্ত পরিমানের ভুলভাবে সেবন করে নেয় তাহলে এর কিছু ক্ষতিকারক
দিক দেখা যেতে পারে। সেই ক্ষতিকারক দিকগুলো হলো:
1. রক্ত পাতলা হওয়ার ঝুঁকি: তুলসী পাতা সেবন করলে রক্ত পাতলা হওয়ার
প্রভাব দেখা যেতে পারে। তবে যারা রক্ত পাতলা হওয়ার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করেন
তাদের তুলসী পাতা খাওয়া উচিত না।
2. ত্বকের সমস্যা: কিছু কিছু মানুষের তুলসী পাতা থেকে এলার্জি দেখা
দিতে পারে। এমন অবস্থা যদি এটি তোকে লাগানো হয় তাহলে তোকে লালচে চিহ্ন, চুলকানি
ইত্যাদি পরিস্থিতির শিকার হতে পারে। তো যাদের তুলসী পাতা এলার্জি রয়েছে তাদের তুলসী পাতা ব্যবহার করা ঠিক
না।
গর্ভবতী নারীদের জন্য ঝুঁকি: তুলসী পাতা গর্ভবতী নারীদের সেবন করা
উচিত না। কেননা তুলসি পাতাতে হরমোনে কাজ করে যেটা গর্ভবতী নারীদের জন্য সমস্যা হতে
পারে।
ত্বকের যত্নে তুলসী পাতার ব্যবহার
ত্বকের যত্নে তুলসী পাতা ব্যবহার -তুলসী পাতা আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত
উপকারী। তুলসী পাতা ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য
করে। মূলত বিশেষ করে তুলসী পাতা রস আমাদের ত্বকের ব্রণ ভালো পথে
সহায়তা করে।, কিছু বলবেন তুলসী পাতা পেস্ট করে নিয়ে সেটা ব্রনের উপরে
লাগিয়ে দেই।
শুকানোর পর এটিকে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলি। এতে অনেকটা আমাদের ব্রণ দূর করতে সহায়তা করে।
তুলসী পাতা ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে সহায়তা করে। এটির জন্য আমাদের তুলসী পাতার সাথে একটু মধু প্রয়োজন হবে। তুলসী পাতা মধু একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করি। সেদিকে ত্বকে ভালোভাবে লাগিয়ে দেই।
২০ থেকে ৩০ মিনিট পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলি তাহলে দেখা যাবে
আগের তুলনায় আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বেড়ে গেছে। যাদের ত্বকে দাগ ব্রণ রয়েছে তারা তুলসী পাতা ব্যবহার করে সেটিকে
অনেকটাই ভালো করতে পারবে। তুলসী পাতা ত্বকে শুষ্কতা দূর করে নিয়মিত তুলসী পাতা ব্যবহার করলে আমাদের
ত্বকের শুষ্কতা দূর হবে, উজ্জ্বলতা বেড়ে যাবে।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার একটা হলেও উপকার হয়েছে। উপরে
তুলসী পাতার সকল উপকরণ সম্পর্কে বলা হয়েছে।
পোস্টটি যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করেন।আর যদি
ওপরের কোন বিষয়ে বুঝতে সমস্যা কিংবা কোন প্রশ্ন করার থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে
এসে করে যাবেন। অথবা আমাদের
যোগাযোগ পেজে
আমাদের সাথে যোগাযোগ করার সকল ঠিকানা দেওয়া আছে সেখান থেকে আমাদের সাথে সরাসরি
যোগাযোগ করতে পারবে।
হেল্থ কেয়ারের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url